ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়া বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে জেব্রা কুমিরের কঙ্কাল তৈরী শিক্ষার্থীদের গবেষণা কাজে নতুন মাইলফলক

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::  করোনা সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার পর সরকার সারাদেশে চিত্র-বিনোদনের অন্যতম খাত পর্যটন স্পট সমুহ কার্যত বন্ধ রেখেছে। একইভাবে প্রায় তিন মাস ধরে বন্ধ রয়েছে দেশের প্রথম প্রতিষ্টিত কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক। অলস সময় কাটাচ্ছেন পার্কের সকল বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অবশ্য কর্মহীন বসে থাকার এই ফাঁকে পার্কের মিউজিয়ামে সংরক্ষণে জন্য তৈরী করা হয়েছে জেব্রা ও কুমিরের স্কেলেটিং অর্থাৎ কঙ্কাল।

ইতোমধ্যে এই দুটি প্রাণীর কঙ্কাল তৈরীর কাজ শেষ করেছে কর্তৃপক্ষ। যাতে পার্কে আগত দর্শনার্থী ছাড়াও বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয়ে প্রাণীবিদ্যা বিভাগে অধ্যায়রনত শিক্ষার্থী গবেষকরা তাদের পড়াশোনার পাশাপাশি গবেষণার ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাফারি পার্কের কর্মকর্তা ফরেষ্টার মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী।

সাফারি পার্ক সুত্রে জানা গেছে, ২০০৫-০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে একটি জেব্রা আনা হয়। পরে ওই জেব্রাটি ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের জন্য দেয়া হয়। কিন্তু ২০০৭ সালে পার্কের একটি বিষাক্ত সাপের কামড়ে মারা যায় জেব্রাটি। ময়নাতদন্ত শেষে পার্কে মাটিতে পুতিয়ে রাখা হয় জেব্রাটিকে। ছয় মাস পর মাটি থেকে ওই জেব্রার হাঁড়গুড়গুলো তুলে পানিতে পরিস্কার করে রোদে শুকিয়ে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখা হয়।

অনুরূপভাবে, ২০০৫ সালে ভারতের মাদ্রাস ক্রোকডাইল ব্যাংক থেকে ১০ ফিট লম্বা ও আড়াই মিটার উচ্চতার একটি মিটা পানির কুমির আনা হয়। পরে ওই কুমিরটি ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে দেয়া হয়। ২০১৮ সালের বার্ধক্যজনিত কারণে ওই কুমিরটিও মারা যায়। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত কুমিরটিকে মাটিতে পুতে ফেলা হয়। ছয় মাস পর কুমিরের মৃতদেহ মাটি থেকে তুলে তার হাঁড়গুড়গুলো সংগ্রহ করা হয়। ওইসব হাঁড়গুড় পানিতে ধুয়ে ও রোধে শুকিয়ে ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হয়।

ডুলাহাজারাস্থ সাফারি পার্কের কর্মকর্তা ফরেষ্টার মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, পার্কের মিউজিয়ামে অনেকদিন ধরে জেব্রা ও কুমিরের হাঁড়গুড়গুলো ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রেখেছি। কিন্তু সময় ও সুযোগ না হওয়ায় সেটা তৈরী করা যাচ্ছিল না। এই করোনার সুযোগে প্রাণীর দুটির হাঁড়গুড়গুলো দিয়ে কঙ্কাল তৈরী করেছি। এই প্রাণী দুটির কঙ্কাল তৈরীর জন্য কুমিল্লা থেকে একজন কারিগর আনা হয়েছে। দুটি কঙ্কাল তৈরীর করতে প্রায় এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে।

ফরেষ্টার মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সদ্য তৈরীকৃত জেব্রা ও কুমিরের কঙ্কাল দুটি পার্কের মিউজিয়ামে আয়নার বক্সেও ভেতর রাখা হবে। এটা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। পাশাপাশি জোলোজী ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীদেরও কাজে আসবে।#

পাঠকের মতামত: